
মিয়ানমারে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য জরুরি মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন ও থাইল্যান্ড একটি যৌথ প্রতিনিধি দল পাঠাবে। এই প্রতিনিধি দলের মিশন পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অংশীদার দেশগুলো। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম এ ঘোষণা দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মালয়েশিয়া সফরের প্রথম দিন এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই ঘোষণা দেন।
প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, মিয়ানমারে শান্তি নিশ্চিত করা এখন আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। পাশাপাশি অবিলম্বে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। প্রথমে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য, এরপর ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি জানান, এ বিষয়ে একটি প্রতিনিধি দল গঠনের কাজ শুরু হয়েছে এবং আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই প্রতিনিধি দল মিয়ানমারে পাঠানো হবে। মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই মিশন সমন্বয় করবেন। মালয়েশিয়া এবছর আসিয়ান আঞ্চলিক জোটের চেয়ারম্যান দেশ হিসেবে এই মানবিক ও কূটনৈতিক উদ্যোগের নেতৃত্ব দিচ্ছে।
আনোয়ার বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে যে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা শরণার্থী রয়েছে, সেটি আমাদের জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয়। এই সংকট শুধু বাংলাদেশের একার নয়, এটি একটি আঞ্চলিক সংকট।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলায় এখন প্রায় ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করছে, যা বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী শিবির হিসেবে পরিচিত।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৮ মাসে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর নতুন করে সহিংসতা ও দমন-পীড়নের কারণে আরও প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।
এই প্রেক্ষাপটে আঞ্চলিক দেশগুলো শান্তি প্রতিষ্ঠা, সহিংসতা বন্ধ এবং রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের পথ খুঁজতে সক্রিয় হচ্ছে। নতুন প্রতিনিধি দলটির কাজ হবে মিয়ানমারের ভেতরে গিয়ে মানবিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা, আন্তর্জাতিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া এবং রাজনৈতিক সমাধানের বিষয়ে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করা। সূত্র: রয়টার্স
পাঠকের মতামত